Intelligence: উপস্থিত বুদ্ধিমত্তায় গ্রেফতার এড়িয়ে বাঁচলেন ইউপি চেয়ারম্যান

প্রকাশিত: ১১:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে ফেসবুক লাইভ করে গ্রেফতার এড়ালেন সাহাব উদ্দিন সাহেল।
এমন ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায়।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে এ ব্যাপারে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহাব উদ্দিন বলেন,’পুলিশের সাথে খারাপ আচরণ ও হামলার অভিযেগে ইউপি চেয়ারম্যান সাহেলের বিরুদ্ধে এসল্ট মামলা করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে’।
তিনি বলেন,’আওয়ামী লীগের দলীয় ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদর থানায় নাশকতা ও হামলার অভিযেগে মামলা হয়েছে। ওই মামলার প্রেক্ষিতেই জাউয়াবাজার পুলিশ ফাঁড়ি থেকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিলো’।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,’ পুলিশ দেখেই ফেসবুকে লাইভ শুরু করে দেন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান। এই লাইভ দেভে আশপাশের অনেকে জড়ো হন ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে। স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়েও লোক জড়ো করা হয়। ফলে ইউপি চেয়ারম্যানকে আর গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ বরং তাদের সামনে দিয়েই মোটরসাইকেলযোগে ইউপি কার্যালয় ছেড়ে চলে যান তিনি ‘।
যদিও পুলিশ বলছে,’মসজিদে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করে পুলিশকে মরধর করে চেয়ারম্যানের লোকজন। আর পুলিশের সংখ্যা কম হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি’।
এ ঘটনার সময় ইউপি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে থাকা তার এক অনুসারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পুলিশ আসার পর চেয়ারম্যান বারবার তাদের কাছে গ্রেপ্তারের কোন কাগজ আছে কী না জানতে চান। তবে তারা কোন কাগজ দেখাতে পারেননি।
সাহাব উদ্দিন সাহেল ছাতক পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কালাম চৌধুরী এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম চৌধুরীর ভাগনে। তিনি ছাতক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত নির্বাচনের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন।
এই ইউপি চেয়ারম্যানের ফেসবুক একাউন্ট নাম সাহেল আহমদ। ওই একাউন্টে এখনও সেই লাইভ ভিডিওটি রয়েছে। প্রায় ২০ মিনিট লাইভে পুলিশের সঙ্গে তাকে তর্কবির্তক করতে শোনা যায়।
ফেসবুক লাইভে দেখা যায়,একদল পুলিশ সদস্য তার কার্যালয়ে ঢুকে তাকে বের হওয়ার অনুরোধ করছেন। কিন্তু সাহাব উদ্দিন চেয়ারে বসে তাকে গ্রেফতারের পক্ষে কোনো কাগজপত্র আছে কি না,পুলিশকে দেখাতে বলছেন। তার সঙ্গে সেখানে থাকা অন্য লোকজনও পুলিশকে কাগজপত্র বা গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করছেন। একপর্যায়ে তিনি সেখানে থাকা লোকজনকে এলাকার মসজিদের মাইকে তাকে ধরে নেওয়ার চেষ্টার বিষয়টি জানিয়ে ঘোষণা দেওয়ার জন্য বলেন।
এ সময় ঘরের মধ্যে থাকা কিছু লোককে পুলিশের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায়। প্রায় ২০ মিনিট এভাবে পুলিশের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।
ফেসবুক লাইভের শেষ দিকে সাহাব উদ্দিনের পাশে থাকা লোকজনকে বাইরে একটি মোটরসাইকেল প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি শোনা যায়। একই সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের যাতে কেউ মারধর না করেন,এটিও বলেন একজন। এরপর সাহাব উদ্দিন বলেন,তিনি যেখানেই থাকেন না কেন,ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চলবে বলে এলাকাবাসীকে লাইভে আশ্বস্ত করেন।
একপর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান তার কক্ষ থেকে বের হয়ে পুলিশের সামনেই মোটরসাইকেলে করে সেখান থেকে চলে যান। লোকজন বেশি হওয়ায় পুলিশ তখন তাকে আর ধরার চেষ্টা করেনি।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সিলেট ২৪ বাংলা/এসডি.