সিলেটের ভোলাগঞ্জ, জাফলং ও বিছনাকান্দির পাথর কোয়ারিগুলো প্রায় ছয় বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে লক্ষাধিক পাথর শ্রমিকের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকলেও, ব্যবসায়ীরা হাইকোর্টের আদেশে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের অনুমতি চাইছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উজান থেকে নেমে আসা বালু-পাথর নদীগুলোর নাব্যতা নষ্ট করে সিলেটকে বন্যার ঝুঁকিতে ফেলেছে। তাই, বালু-পাথর উত্তোলন জরুরি। তবে, প্রশাসন আদালতের সার্টিফাইড কপি পেয়েই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
সিলেটের ভোলাগঞ্জ, জাফলং ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারিগুলো ২০১৮ সাল থেকে বন্ধ থাকায় স্থানীয় অর্থনীতি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে এবং ব্যবসায়ীরা দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম।
পরিবেশগত কারণে কোয়ারিগুলো বন্ধ থাকলেও, হাইকোর্ট ২০১৪ সালের পাথর উত্তোলন গাইডলাইন অনুযায়ী সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, এই আদেশের ফলে স্থানীয় অর্থনীতি সচল হবে এবং হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তারা মনে করেন, পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করে এই সম্পদকে টেকসইভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।
সিলেটে বালু ও পাথর উত্তোলন নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও প্রশাসনের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দিয়েছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমের মতে, প্রতিবছর বর্ষাকালে উজান থেকে নেমে আসা বালু ও পাথর সিলেটের নদীগুলোর নাব্যতা নষ্ট করে। ফলে সিলেটে হঠাৎ করে বন্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণে বালু ও পাথর উত্তোলন করা জরুরি। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে আলোচনা হয়েছে এবং তারা একটি পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন যে হাইকোর্ট কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছে। তবে এখনো তাদের কাছে আদালতের কোনো সরকারি নোটিশ আসেনি। আদালতের নির্দেশনা পেলেই তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
সিলেট ২৪ বাংলা/বিডিবি